দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে পিআর (প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন) পদ্ধতি চালু করা হলে দেশে বড় ধরনের বিভেদ ও বিভাজনের সৃষ্টি হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি।
তিনি বলেন, ‘‘পিআর পদ্ধতি নিয়ে যেটা বলা হচ্ছে—তারেক রহমান স্পষ্টভাবে বলেছেন, দুই-একটি রাজনৈতিক দলের পক্ষে কিংবা রাজনৈতিক ব্যক্তির মত থেকে আসা মতবাদ বাংলাদেশের রাজনীতিতে গ্রহণযোগ্য নয়। ইউরোপের অনেক দেশেই পিআর পদ্ধতি রয়েছে, কিন্তু বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এটি কার্যকর নয়। এখন যদি এই পদ্ধতি চালু করা হয়, তাহলে নিজেদের মধ্যেই বড় ধরনের বিভেদ ও বিভাজন তৈরি হবে। এতে ফ্যাসিস্টরা বড় ধরনের সুযোগ পাবে।’’
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘‘আওয়ামী লীগের ফ্যাসিস্টরা আমাদের ওপর আঘাত করেছে, দেশ ও রাজনীতি ধ্বংস করেছে, প্রশাসনকে জিম্মি করেছিল। তাদের কোনোভাবেই সুযোগ দেওয়া যাবে না। আগে তাদের বিচার হওয়া উচিত।’’
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) দুপুরে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির প্রতিনিধি নির্বাচনের ভোট গ্রহণ পরিদর্শন ও পরবর্তী আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। দত্তপাড়া ইউনিয়নের পূর্ব সৈয়দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এ্যানি আরও বলেন, ‘‘প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনুস লন্ডনে গিয়েছেন এবং একটি গুরুত্বপূর্ণ সুযোগে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে কথা বলেছেন। এই আলোচনায় ছিল দেশের কথা, জাতির কথা—কোনো ব্যক্তিগত বিষয় নয়। এই সম্মানজনক যোগাযোগে আমরা সাহস, মনোবল ও আনন্দ পেয়েছি। যদি শীত মৌসুমে, রোজার আগেই, ফেব্রুয়ারি মাসে একটি সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়—যা উৎসবমুখর, স্বতঃস্ফূর্ত ও নিরপেক্ষ হবে, তাহলে আমরা সরকারকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করব।’’
তিনি বলেন, ‘‘ফ্যাসিস্টদের বিচারের জন্য এখন থেকেই আমাদের একটি সুদৃঢ় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। সেই ঐক্যের ভিত্তিতেই আমরা দেশ গড়তে চাই, নতুনভাবে নির্মাণ করতে চাই। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ভিন্নমত থাকবেই, প্রতিযোগিতা থাকবে, কিন্তু দেশের বৃহত্তর স্বার্থে আমাদের ক্ষুদ্র স্বার্থ ত্যাগ করতে হবে। সবাই ঐক্যবদ্ধ আছেন, আমরা বিশ্বাস করি এবং থাকবেন বলেও আশা করি।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষ অবস্থান থেকে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে। আমরা বলেছি, যারা যুগপৎ আন্দোলন ও ফ্যাসিবাদবিরোধী সংগ্রামে অংশ নিয়েছে, তারা সবাই মিলে জাতীয় ঐক্যমতের সরকার গঠন করবো।’’
আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন—জেলা বিএনপির সদস্য হাফিজুর রহমান, চন্দ্রগঞ্জ থানা বিএনপির আহ্বায়ক এম বেলাল হোসেন, সদস্য সচিব মো. আনোয়ার হোসেন বাচ্চু, যুগ্ম আহ্বায়ক এম ইউসুফ ভূঁইয়া, সোহেল মাহমুদ, শরীফ উদ্দিন পাটওয়ারী, জেলা যুবদলের সদস্য সচিব আবদুল আলিম হুমায়ুন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মহসিন কবির স্বপন, জেলা কৃষকদলের সভাপতি মাহবুব আলম মামুন ও সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সোহেল প্রমুখ।