জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, মিডিয়া জনগণের পক্ষে কথা বলার দায়িত্ব পালনের বদলে আজকাল কিছু সংবাদ মাধ্যম দুর্নীতিবাজ ওলিগার্কদের সুরক্ষা ঢাল হয়ে উঠেছে। কিছু মিডিয়া একদিকে দুর্নীতিবাজদের ফেরেশতা বানাচ্ছে, অন্যদিকে তারা আবার মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করার মাধ্যমে সৎ রাজনীতিবিদদের হেনস্তা করছে এবং ক্ষমতার পেছনের খেলায় লিপ্ত রয়েছে।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে এসব কথা জানান।
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, “মিডিয়া জনগণের হয়ে কথা বলবে, এটাই প্রত্যাশিত। কিন্তু আজকের কিছু মিডিয়া হাউজ এমন অলিগার্কদের (রাষ্ট্রের অল্পসংখ্যক ধনী ও ক্ষমতাধর ব্যক্তি, যারা দখলপূর্বক প্রভাব বিস্তার করে) হয়ে কাজ করছে, যাদের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অপরাধ ও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। তারা মিডিয়াকে ব্যবহার করছে এসব অপরাধের ঢাল হিসেবে এবং ক্ষমতায় কে থাকবে সেটা পেছন থেকে নির্ধারণের জন্য।”
এসব মিডিয়া প্রতিষ্ঠান কুৎসিত মিথ্যা প্রচার করে জনগণকে বিভ্রান্ত করছে, দুর্নীতিবাজদের ফেরেশতা বানাচ্ছে এবং সৎ রাজনীতিবিদদের হেনস্তা করছে এমনটা উল্লেখ করে এনসিপির এই নেতা বলেন, আমরা কর্পোরেট মিডিয়ার আশীর্বাদ নিয়ে রাজনীতি করি না। রাজনৈতিক দল ও মিডিয়ার সম্পর্ক হওয়া উচিত স্বচ্ছ, পেশাদার এবং নীতিভিত্তিক। আমরা কখনো কোনো মিডিয়ার সঙ্গে ব্যাকডোর আলোচনায় যাইনি, যাবো না এবং কোনো আড়ালের সমঝোতাও করবো না।
হাসনাত বলেন, “এসব সংগঠন অতীতে ফ্যাসিবাদী শাসনের সুবিধাভোগী ছিল। তারা সেই সময়ে হত্যা, গুম, খুন, ব্যাংক লুট দেখেও নীরব থেকেছে, এমনকি এসবের পক্ষ নিয়েছে। তারা আবারো এমন অবৈধ ব্যবস্থা কায়েম করতে মরিয়া, কিন্তু আমরা তা হতে দেবো না।”
হাসনাত আরও বলেন, “গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় আমরা বিশ্বাস করি, কিন্তু সেই স্বাধীনতা যেন সত্য ও জনগণের কল্যাণে নিবেদিত হয়। আমরা মিডিয়ার কাছে কোনো দলীয় আনুগত্য চাই না, বরং দায়বদ্ধ, ন্যায়পরায়ণ এবং তথ্যনিষ্ঠ সাংবাদিকতার প্রত্যাশা করি।”
তিনি বলেন, “আজকাল কালো টাকার পাহাড় গড়ে দুর্নীতিবাজ অলিগার্করা অনেক তরুণ সাংবাদিককে দাসে পরিণত করেছে। আমরা চাই, সাংবাদিকরা সেই শৃঙ্খল ভেঙে স্বাধীন সাংবাদিকতার মশাল হাতে নিয়ে সত্যের জন্য লড়াই করবে।”
হাসনাত আবদুল্লাহ সাংবাদিক সমাজের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “আপনারা যে কোনো অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে মুক্ত, আমরা সেই প্রতিবাদের পাশে আছি। সততা ও ন্যায়পরায়ণতা ছাড়া মিডিয়া ও রাজনীতি সফল হতে পারে না। তাই আমরা প্রত্যাশা করি, গণমাধ্যম জনগণের কল্যাণে কাজ করবে, মিথ্যা ও পক্ষপাত থেকে বিরত থাকবে।”