বুধবার, ১৬ জুলাই, ২০২৫

ফেনীতে ‘জুলাই স্মৃতিস্তম্ভ’ নির্মাণের স্থান নির্ধারণে বিতর্ক

-বিজ্ঞাপণ-spot_img

ফেনীতে ‘জুলাই স্মৃতিস্তম্ভ’ নির্মাণের স্থান নির্ধারণ নিয়ে শহীদ পরিবার, আহতরা ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, তারা শহরের প্রাণকেন্দ্রে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের দাবি জানালেও প্রশাসন তাদের মতামত উপেক্ষা করে শহরের প্রান্তে সালাউদ্দিন মোড়ে নির্মাণকাজের উদ্যোগ নিয়েছে।


গত ৭ জুলাই জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভায় ২০২৪ সালের আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক ও অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ নবীনচন্দ্র লাইব্রেরির সংলগ্ন স্থান কিংবা পুরাতন জেলা কারাগারের পাশের জায়গায় স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপনের প্রস্তাব দেন। তবে প্রশাসন সিদ্ধান্ত নেয় সালাউদ্দিন মোড়ে স্থাপনের।


এতে ক্ষোভ প্রকাশ করে শহীদ পরিবার ও আন্দোলনের সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, তাদের পরামর্শ উপেক্ষা করা হয়েছে।

বিপ্লবে শহীদ সাইদুল ইসলামের বাবা বলেন, সরকারের উদ্যোগকে আমরা সাধুবাদ জানাই। এটি নবীনচন্দ্র লাইব্রেরির পাশে হওয়ার কথা ছিল। সালাউদ্দিন মোড় মূল শহরের একটু বাইরে পড়ে, তাই বিষয়টি সবার নজরে আসবে না।


শহীদ ইশতিয়াক আহমেদ শ্রাবণের বাবা বলেন, আমরা মূল শহরের দুটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপনের পরামর্শ দিয়েছিলাম। কিন্তু তা উপেক্ষা করে শহরের বাইরের জায়গায় এটি করা হচ্ছে। এটি আমাদের জন্য দুঃখজনক।


বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক আবদুল আজিজ বলেন, আমরা মতামত দিয়েছিলাম পুরাতন কারাগারের অথবা নবীনচন্দ্র লাইব্রেরির পাশে স্মৃতিস্তম্ভ হবে। এখন বলা হচ্ছে সেটা সম্ভব নয়। কেন সম্ভব নয়? কোনো অদৃশ্য শক্তি কি এই সিদ্ধান্তে প্রভাব ফেলছে?


জেলা জামায়াতের আমীর মুফতি আবদুল হান্নান বলেন, ঢাকার পরে একদিনে সবচেয়ে বেশি শহীদ হয়েছেন ফেনীতেই। আমরা চাই স্মৃতিস্তম্ভ এমন জায়গায় হোক, যেখানে মানুষের চোখে পড়বে। শহরের বাইরে হলে তা মর্যাদা হারাবে।


জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শেখ ফরিদ বাহার জানান, শহীদ পরিবার ও আহতদের মতামত নিয়ে আমরা নবীনচন্দ্র লাইব্রেরির পাশে স্মৃতিস্তম্ভ করার কথা বলেছিলাম। এছাড়াও আরো কয়েকটি স্থান আমরা দেখিয়েছি। তবে এখন শুনছি এটি সালাউদ্দিন মোড়ে হচ্ছে। কেন সেখানে হচ্ছে তা পরিষ্কার নয়।


এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ইসমাইল হোসেন জানান, শহীদদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ বিষয়ে এখনো কোনো স্থায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। তবে সালাউদ্দিন মোড়ে সরকারের খাস জমি উচ্ছেদ করা হচ্ছে। এ বিষয়ে সবার মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।


উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট ফেনীতে ছাত্র আন্দোলনের সময় আওয়ামী সন্ত্রাসীদের গুলিতে মহিপালে আট শিক্ষার্থীসহ মোট ১১ জন শহীদ হন। সরকারের পক্ষ থেকে স্মৃতিচারণ ও শ্রদ্ধার অংশ হিসেবে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

শেয়ার করুন

সর্বশেষ নিউজ

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জলাবদ্ধতায় চরম ভোগান্তি

রাজশাহী প্রতিনিধি: রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের বহির্বিভাগে বৃষ্টির পানিতে সৃষ্টি হয়েছে চরম জলাবদ্ধতা। গত ২৪ ঘণ্টার টানা বৃষ্টিতে হাসপাতালের প্রধান ফটক ও জরুরি...

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় বাবার হাতে মেয়ে খুন

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় পারিবারিক কলহ ও মানসিক উত্তেজনার জেরে নিজ কন্যাকে শ্বাসরোধে হত্যা করেছেন এক পিতা। নিহত আইনুন নাহার আনিতা (২৬) এবং অভিযুক্ত...

১০ লাখ মানুষের সমাবেশ করতে চায় জামায়াত

আগামী ১৯ জুলাই ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় সমাবেশের ডাক দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। এই সমাবেশকে দলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ উপস্থিতির সমাবেশে পরিণত করতে জোর প্রচারণা চালিয়ে...

চরমোনাইয়ের বিরুদ্ধে রাজপথে স্লোগান, বিএনপির জন্য দুর্ভাগ্যজনক: রেজাউল করীম

চরমোনাই দরবার সম্পর্কে রাজপথে ‘নোংরা’ স্লোগান দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম। তিনি বলেছেন, বিএনপির...

সম্পর্কিত নিউজ

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জলাবদ্ধতায় চরম ভোগান্তি

রাজশাহী প্রতিনিধি: রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের বহির্বিভাগে বৃষ্টির পানিতে সৃষ্টি হয়েছে চরম জলাবদ্ধতা।...

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় বাবার হাতে মেয়ে খুন

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় পারিবারিক কলহ ও মানসিক উত্তেজনার জেরে নিজ কন্যাকে শ্বাসরোধে হত্যা...

১০ লাখ মানুষের সমাবেশ করতে চায় জামায়াত

আগামী ১৯ জুলাই ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় সমাবেশের ডাক দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। এই সমাবেশকে...