ঢাবি প্রতিনিধি
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, একাত্তরের চেতনা ব্যবসার মতো চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান নিয়ে যাতে কোন চেতনা ব্যবসা না হয়। যারা নিজেদের একক অংশীজন দাবি করে তাদের মনে রাখতে হবে জুলাই সবার।
রোববার (২০ জুলাই) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি অডিটোরিয়ামে “স্ফুলিঙ্গ থেকে দাবানল: অভ্যুত্থানের অজানা অধ্যায়” শীর্ষক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উপদেষ্টা ড. মাহদী আমিন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক শামীমা সুলতানা, অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট সাইয়েদ আবদুল্লাহ, আদর্শ প্রকাশনীর প্রকাশক মাহবুব রাহমান প্রমুখ।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, স্বাধীনতা উত্তর এই বাংলাদেশে আমরা কোন বিভক্তি চাই না। কারা স্বাধীনতার পক্ষে ছিলো কারা বিপক্ষে ছিল আমরা এই সমীকরণে যেতে চাই না। যারা এই চেতনা ব্যবসা করতো তারা এখন দিল্লি পালিয়েছে৷ জুলাইয়ের চেতনাকে ধারণ করে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আমাদের কেউ সরকার গঠন করবে, কেউ বিরোধী দলে যাবে, আমাদের মধ্যে তর্ক-বির্তক থাকবে কিন্তু কোন বিভেদ থাকবে না।
তিনি আরও বলেন, একটি শক্তিশালী গনতান্ত্রিক রাষ্ট্র বিনির্মানের মাধ্যমে আমাদের শহীদদের রক্তের ঋণ পরিশোধ করতে হবে। আমাদের বিদেশি বন্ধু থাকবে কিন্তু কোন প্রভু থাকবে না। যাদের প্রভু ছিল তাদের রাজনৈতিক মৃত্যু হয়েছে। শহিদের স্বপ্ন ছিল একটা বৈষম্যহীন, মানবিক মূল্যবোধ সমৃদ্ধ বাংলাদেশ। তাদের ওই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে ফ্যাসিবাদবিরোধী সকল শক্তিকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ড. মাহদী আমিন বলেন, আমাদের জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিছক কোটা আন্দোলন স্ফুলিঙ্গ থেকে দাবানলে পরিণত হওয়ার পেছনে বিএনপির উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে। আজকে আমরা যে এক দফার কথা বলি, সবার আগে ১৬ জুলাই তারেক রহমান এক দফার ঘোষণা দিয়েছিলেন। তিনি ধাপে ধাপে একটা আন্দোলনকে গণঅভ্যুত্থানে রূপ দিয়েছিলেন।
তিনি আরও বলেন, আজকে বাংলাদেশের আলোচিত শব্দ সংস্কার। অথচ সবচেয়ে বড় সংস্কার হলো নির্বাচন। কেননা এদেশের মানুষ বিগত পনেরো বছরে গনতান্ত্রিক অধিকার নির্বাচন থেকে বঞ্চিত হয়েছে। তাই নির্বাচনের মাধ্যমে গনতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
সাইয়েদ আব্দুল্লাহ বলেন, লক্ষ্মণ সেনের পরে যে শাসক এই ভূখণ্ড থেকে পালিয়েছে সে হলো শেখ হাসিনা। ৫ আগস্টের পরে সবাই আশা করেছিলো রাজনীতি হবে প্রতিযোগিতার, প্রতিহিংসার নয়। সর্বপ্রথম ওই দিন সন্ধ্যায় “জিরো পার্সেন্ট কন্ট্রিবিউশান, হান্ড্রেড পার্সেন্ট সেলিব্রেশন” কথাটির মাধ্যমে বিভাজনের রাজনীতি শুরু হয়। এক এগারোর সময় বিরাজনীতিকরণের যে আলোচনা ছিলো সেগুলো নতুন করে মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। এর মাধ্যমে ভারতীয় এজেন্সির এজেন্ডা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
স্বাগত বক্তব্যে বইটির লেখক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবিদুল ইসলাম খান বলেন, ২০২৪ সালের ৫ জুনই ছাত্রদল স্বৈরাচার পতনের গোড়াপত্তন শুরু করেছিলো। ১৪ জুলাই রাতে সর্বপ্রথম স্বৈরাচার স্লোগান দিয়েছিল ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। বর্তমানে জুলাইয়ের ইতিহাসে ছাত্রদলের অবদানকে স্বীকৃতি দেওয়া হচ্ছে না। ইতিহাসকে নানাভাবে বিকৃত করা হয়েছে। জুলাইয়ের বস্তুনিষ্ঠ ইতিহাসকে তুলে ধরতেই আমার এই প্রয়াস।