রাজশাহী প্রতিনিধি: মাইলস্টোন কলেজে বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান দুর্ঘটনায় তরুণ বৈমানিক ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলাম সাগর মৃত্যুবরণ করেছেন। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে সিএমএইচ-এ নেওয়া হলে সেখানেই তার মৃত্যু হয়।
সোমবার (২১ জুলাই) দুপুরে উত্তরা মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে এ দুর্ঘটনা ঘটে। তবে সন্ধ্যা সাড়ে পাঁচটা পর্যন্তও এই দুঃসংবাদ জানতেন না সাগরের মা-বাবা, বোন ও বোনজামাই। ঢাকায় অবস্থানরত সাগরকে জীবিত দেখতে তারা বিকেলে বিমানবাহিনীর বিশেষ হেলিকপ্টারে করে রওনা হন রাজধানীর উদ্দেশে।
তৌকিরের পরিবার রাজশাহীর উপশহর তিন নম্বর সেক্টরের আশ্রয় ভবনে একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন। তার বাবা তহুরুল ইসলাম একজন আমদানি-রপ্তানি ব্যবসায়ী। মা সালেহা খাতুন, একমাত্র বোন সৃষ্টি এবং বোনজামাই মিলে ওই বাসায় বসবাস করতেন। বাসার মালিক আতিকুল ইসলাম জানান, সোমবার সকালে প্রথমবারের মতো একা প্রশিক্ষণ বিমান চালানোর খবরে পরিবারের সদস্যরা অত্যন্ত আনন্দিত ও গর্বিত ছিলেন।
দুপুরের পর দুর্ঘটনার খবর পেয়ে উদ্বিগ্ন পরিবারের সদস্যরা সাগরকে দেখতে ঢাকায় যেতে ইচ্ছা প্রকাশ করেন। পরে বিমানবাহিনীর পক্ষ থেকে তাদের জন্য হেলিকপ্টারের ব্যবস্থা করা হয়। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে র্যাবের একটি মাইক্রোবাসে করে তাদের রাজশাহী শাহ মখদুম বিমানবন্দরে নেওয়া হয়, সেখান থেকেই তারা ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হন।
বাসার মালিক আতিকুল আরও বলেন, “তারা যখন রওনা হন, তখনও জানতেন না সাগর মারা গেছেন। সবাই ভাবছিলেন তিনি সিএমএইচ-এ চিকিৎসাধীন।”
তৌকির ইসলাম সাগরের গ্রামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলায়। তিনি রাজশাহী ল্যাবরেটরী স্কুল অ্যান্ড কলেজে সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। পরে তিনি পাবনা ক্যাডেট কলেজে ভর্তি হন এবং বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে কমিশনপ্রাপ্ত হন। গত বছর তিনি বিয়ে করেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষিকাকে।
সাগরের অকাল মৃত্যুতে রাজশাহীতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এলাকাবাসী ও প্রতিবেশীরা এই মর্মান্তিক ঘটনায় শোকাহত এবং তার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
সজল মাহমুদ