বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ময়দানেই পরিচয়, সেখান থেকেই বন্ধুত্ব, আর ধীরে ধীরে গড়ে ওঠা ভালো লাগা—শেষ পর্যন্ত সেই সম্পর্ক গড়ালো বিবাহবন্ধনে। আন্দোলনের আগুনঝরা সময় থেকে একসঙ্গে হাঁটা শুরু করা মেহেদী হাসান সীমান্ত ও সুমাইয়া বিনতে নুরুল হক অবশেষে জীবনের নতুন অধ্যায়ে পা রাখলেন।
শনিবার (২৬ জুলাই) দুপুরে নোয়াখালীর এই দুই তরুণ-তরুণী প্রেমের পূর্ণতা দিয়ে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।
সীমান্ত নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী। পাশাপাশি তিনি নোবিপ্রবির বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহ -সমন্বয়ক ও নোয়াখালী জেলা কমিটির সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব হিসেবে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। অন্যদিকে, সুমাইয়া বিনতে নুরুল হক নোয়াখালী সদর উপজেলার বাঁধেরহাট এলাকার গোরাপুর ফাজিল মাদ্রাসার ফাজিল প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী।
তাদের ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট প্রথমবারের মতো কথা হয় সীমান্ত ও সুমাইয়ার। এরপর ময়দানে একসঙ্গে সময় কাটাতে কাটাতে গড়ে ওঠে বন্ধুত্ব। সময়ের সঙ্গে সেই বন্ধন রূপ নেয় ভালোবাসায়। বিষয়টি জানানো হয় দুই পরিবারকেই, আর পরিবারগুলোর সম্মতিতেই বিয়ের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়।
সুমাইয়া বলেন, “আন্দোলনের সময় সীমান্তের স্লোগান, সাহস আর সততা আমাকে খুব আকৃষ্ট করেছিল। তার প্রতি শ্রদ্ধা আর বিশ্বাস থেকেই ধীরে ধীরে ভালোবাসা গড়ে ওঠে।”
সীমান্ত বলেন, “সুমাইয়ার সঙ্গে কথা শুরু আন্দোলনের সময়ই। তবে তখন প্রেম নয়, ছিল সহযোদ্ধার মতো সম্পর্ক। ৫ আগস্ট তাকে আমার মনের কথা জানাই। পরে পরিবারকে জানিয়ে সম্মতিতে বিয়ের সিদ্ধান্ত নিই।”
সুমাইয়ার বড় ভাই মো. নুর হোসেন নিজেও ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত। তিনি বলেন, “সীমান্ত আন্দোলনের সামনের সারির যোদ্ধা। তার স্লোগানে অনেক সাহস পেয়েছি আমরা। ওর মতো একজনকে আমরা পরিবারের সদস্য হিসেবে পেয়ে খুশি। এই জুটির জন্য অনেক অনেক শুভকামনা।”
ছাত্র রাজনীতির মঞ্চ থেকেই ভালোবাসা আর জীবনের নতুন যাত্রা শুরু করলেন সীমান্ত ও সুমাইয়া। তাদের এই গল্প আন্দোলনের ময়দান পেরিয়ে হয়ে উঠেছে আশাবাদের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
কাউসার আহমেদ
০১৬৩০৫১০৬০৭