ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) হল ও একাডেমিক অঙ্গনে ছাত্ররাজনীতির রূপরেখা নিয়ে ২১টি ছাত্রসংগঠনের সঙ্গে বৈঠক করেছে ঢাবি প্রশাসন।
রোববার (১০ আগষ্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনস্থ আব্দুল মতিন চৌধুরী ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, গনতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ সহ ক্যাম্পাসে ক্রিয়াশীল ২১টি ছাত্রসংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রেস বিফিং করেন ছাত্রসংগঠনগুলো। ব্রিফিংয়ে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, শিক্ষার্থীদের আবেগকে সম্মান করে আমরা রাজনীতি করতে চাই। ছাত্ররাজনীতির রূপরেখার মাধ্যমে যারা গুপ্ত রাজনীতি করে তাদের সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, আজকের সভায় সবাই এ বিষয়ে ঐক্যমত্যে পৌঁছেছে ঢাবিতে কোন গুপ্ত রাজনীতি চলবে না। ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের মাধ্যমে গুপ্ত রাজনীতিকে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও দাবি করেন তিনি।
এছাড়াও, ঢাবি ক্যাম্পাসে গত এক বছরের সকল মবতন্ত্রের জন্য ছাত্রশিবিরকে দায়ী করে এই নেতা বলেন, তারা নানাভাবে মবকে উসকে দিচ্ছে। গুপ্ত রাজনীতির মাধ্যমে তারা সত্যিকারের সাধারণ শিক্ষার্থীদের আবেগকে পুঁজি করে মব করছে।
ছাত্রশিবিরের ঢাবি শাখার সভাপতি এস এম ফরহাদ বলেন, হলে ছাত্ররাজনীতি থাকার পক্ষে এ বিপক্ষে উভয় মতই আছে। শিক্ষার্থীদের পালস বুঝে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তবে এটি যেন আসন্ন ডাকসুকে প্রভাবিত করতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা হলের রাজনীতির ফরম্যাট কেমন হবে এটার একটা স্যাম্পল প্রকাশ করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে প্রস্তাব করেছি। আমরা আজকের সভায় ছাত্ররাজনীতির ব্যাপারে আমাদের কোন মতামত দিই নাই। এছাড়াও, এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের মতই শিবিরের মত হবে বলে জানান তিনি।
বিগত ১৬ বছরে ছাত্রলীগের অপরাজনীতির কারণে এ মুহুর্তে ঢাবির হলে ছাত্ররাজনীতি থাকা উচিত না বলে মনে করে গনতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ। দলটির কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব জাহিদ আহসান বলেন, জুলাইয়ে ছাত্ররাজনীতির ব্যাপারে শিক্ষার্থীরা তাদের অবস্থান জানিয়ে দিয়েছে।
তিনি বলেন, যারা ১০ ভাগ রাজনৈতিক আর ৯০ ভাগ কোচিং সেন্টার কেন্দ্রীক, তাদের অন্যানদের সাথে রাজনীতি করার মেরিট আছে কিনা এ প্রশ্নটি আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে করেছি। যারা নামে বেনামে বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের মাধ্যমে রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন করে, তাদের ব্যাপারে আমরা প্রশাসনকে জানিয়েছি।
তবে সভায় ছাত্রশিবিরকে রাখায় ওয়াকআউট করে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের একটি অংশ এবং বাংলাদেশ ছাত্রলীগ-বিসিএল। তারা তাদের বক্তব্য উপস্থাপন করে শিবিরের অংশগ্রহণের নিন্দা জানিয়ে সভা ছেড়ে চলে যায়।