ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলায় পাল্টাপাল্টি সমাবেশের পরিকল্পনার কারণে ১৪৪ ধারা জারি করেছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাহুল চন্দ।
বুধবার (১৩ আগস্ট) বিকেল ৩টায় একই স্থানে বিএনপি ও যুবদলের সমাবেশের কারণে জননিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কায় ফৌজদারি কার্যবিধি, ১৮৯৮ এর ১৪৪ ধারা মোতাবেক এ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
নিষেধাজ্ঞা জারি থাকবে মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) রাত ১০ টা থেকে বুধবার রাত ১২টা পর্যন্ত।
এসময় উপজেলা পরিষদ মার্কেট চত্বর সংলগ্ন এলাকায় সকল প্রকার সমাবেশ, মিছিল, মিটিং, লাঠিসহ অস্ত্র বহন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এছাড়া মাইক ও শব্দবর্ধক যন্ত্র ব্যবহারেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। আদেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও উল্লেখ করা হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাহুল চন্দ বলেন, “দু’পক্ষই সমাবেশের বিষয়ে মৌখিকভাবে জানিয়েছে, তবে কাউকেই লিখিত অনুমতি দেওয়া হয়নি। একই সময়ে একই স্থানে সমাবেশ ডাকায়, সংঘর্ষের সম্ভাবনা থাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।”
জানা গেছে, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস’ উপলক্ষে উপজেলা বিএনপির একটি অংশ ১৩ আগস্ট বিকেল ৩টায় সমাবেশের ঘোষণা দেয়। এতে প্রধান অতিথি থাকার কথা বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালামের। আমন্ত্রণপত্রে স্বাক্ষর করেন উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট নুর হোসেন। এই গ্রুপটি বিএনপির কেন্দ্রীয় ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জামালের বিরোধী হিসেবে পরিচিত।
অন্যদিকে, একই সময়ে উপজেলা যুবদলও সমাবেশের ঘোষণা দেয়। তারা রফিকুল ইসলাম জামালের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত।
তাদের সমাবেশে উপস্থিত থাকার কথা ছিল জেলা যুবদলের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক রবিউল হোসেন তুহিন ও সদস্যসচিব আনিছুর রহমানের। তবে রবিউল হোসেন তুহিন দাবি করেন, রাজাপুর যুবদলের এ আয়োজন সম্পর্কে তিনি অবগত নন।
এদিকে উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব সৈয়দ নাজমুল হক জানান, কেন্দ্রীয় নির্দেশনায় দীর্ঘদিন ধরেই এ সমাবেশের পরিকল্পনা ছিল, যা বৃষ্টির কারণে পিছিয়েছে এবং এক সপ্তাহ আগে অনুমতি নেওয়া হয়েছে।
বিএনপির অভিযোগ, যুবদল ইচ্ছাকৃতভাবে একই সময় ও স্থানে সমাবেশ ডেকে তাদের কর্মসূচি ভণ্ডুলের চেষ্টা করছে। অপরদিকে যুবদলের দাবি, বিএনপি অযথা অভিযোগ তুলে উত্তেজনা সৃষ্টি করছে এবং সংঘর্ষের পরিবেশ তৈরি করছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার রাতেই দুই পক্ষ মোটরসাইকেল শোডাউন ও মহড়া চালায়, যা এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। অনেকে সমাবেশের দিন নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
রাজাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইসমাইল হোসেন জানান, পাল্টাপাল্টি সমাবেশের কারণে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির সম্ভাবনায় ইউএনও’র নিকট থেকে ১৪৪ ধারা জারির আবেদন করা হয়।
ইউএনও’র আদেশ অনুযায়ী, মার্কেট চত্বরে সব ধরনের সমাবেশ নিষিদ্ধ এছাড়া ২০০ মিটারের মধ্যে পাঁচ বা ততোধিক লোকের একত্রে চলাচল এবং লাঠি বা অস্ত্র বহন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও জরুরি পরিষেবা ছাড়া কেউ এই আদেশ অমান্য করতে পারবে না বলেও উল্লেখ করা হয়।