কুমিল্লা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. শামছুল ইসলাম ও জেলা প্রশাসক আমিরুল কায়সারকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি ও হুমকি দিয়েছেন কুমিল্লা-১০ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপি নেতা আবদুল গফুর ভূঁইয়া।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) দুপুর থেকে এ ঘটনার একটি অডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে, জেলাজুড়ে শুরু হয় আলোচনা সমালোচনা।
জানা যায়, নাঙ্গলকোট উপজেলার ভোলাইন বাজার উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজের সভাপতি পদ নিয়ে বিরোধের জেরে এ ঘটনা ঘটে।
সূত্র জানায়, গত ১৮ মে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার প্রেস উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদারের বড় ভাই ড. মীর আবু সালেহ শামসুদ্দীন (শিশির)– কে ভোলাইন বাজার উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজের সভাপতি হিসেবে সুপারিশ করেন কুমিল্লার জেলা প্রশাসক। পরে শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান তা প্রতিষ্ঠানটির প্রধানের কাছে পাঠান।
এর পরপরই সাবেক এমপি আবদুল গফুর ভূঁইয়া ফোনে শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ ও নানা হুমকি দেন।
পরদিন সশরীরে তার সহযোগীদের নিয়ে বোর্ডে গিয়ে চেয়ারম্যানকে ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগও উঠে।
এদিকে ভাইরাল হওয়া অডিও ক্লিপটিতে শোনা যায়, উত্তেজিত কণ্ঠে গফুর ভূঁইয়া বলেন, ‘আপনার কত বড় কলিজা হয়েছে আমি দেখে নেব। আপনাকে কে বসিয়েছে, তার কলিজা খুলে ফেলব, আপনার কলিজাও খুলে ফেলব। বেয়াদবিরও একটা সীমা আছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আপনি এটা সুন্দরভাবে সমাধান না করলে আপনার ক্ষতি হবে। আমি আপনাকে দেখে নেব। আমি টোকাই না, আইন জানি, এরপর কুত্তার বাচ্চা ডিসি, শুয়োরের বাচ্চা বলেও গালি দেন।’
ঘটনার পর বোর্ড চেয়ারম্যানের বিশেষ অনুরোধে ড. মীর আবু সালেহ শামসুদ্দীন সভাপতি পদ থেকে অব্যাহতি নেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়সার বলেন, ‘আমার সঙ্গে সাবেক এমপির কোনো কথা হয়নি। উনার সঙ্গে বোর্ড চেয়ারম্যানের কথা হয়েছে। হয়তো উনাকে গালিগালাজ করেছেন।’
অপরদিকে শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান শামসুল আলম বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্য করতে চাই না।’
বিএনপির চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এই লোক (গফুর ভূঁইয়া) প্রশাসনের লোকজনকে ক্ষমতার অপব্যবহার করে হেনস্তা ও হুমকি দেন। তিনি এলাকায় আওয়ামী পুনর্বাসনেরও দায়িত্ব নিয়েছেন।’
অভিযোগের বিষয়ে আবদুল গফুর ভূঁইয়া বলেন, ‘এগুলো আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার। এ বিষয়ে আমি আর কিছু বলতে চাই না।’