আগামী নির্বাচনে এটি কনফার্ম বলা যায় যে বিএনপি অথবা জামায়াতে ইসলামী সরকারের নেতৃত্বে আসবে বলে মন্তব্য করেছেন রাজনীতি বিশ্লেষক ড. ফয়জুল হক।
বুধবার ফেস দ্যা পিপলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এমনটা জানান।
তিনি বলেন, বিএনপি বড় দল হিসেবে যেমন ক্ষমতায় যাওয়ার দাবি তুলতে পারে, ঠিক তেমনি জামায়াতে ইসলামীও মজলুম সংগঠন হিসেবে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিতে পারে। তবে এই দুটি দলের মধ্যে একটি দল ক্ষমতায় যাবে এবং অন্যটি বিরোধী দল হবে—এতে কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু এই দুটি দলকেই একমত হতে হবে যে, ক্ষমতায় যেই যাবে তাকে সহযোগিতা করা হবে এবং বিরোধী দলে যেই থাকবে তাকেও সহযোগিতা করা হবে।
এই রাজনঈতিক বিশ্লেষক বলেন, কাউকে এমনভাবে দমন-পীড়ন করা যাবে না, যাতে দুই দলের জন্যই ভবিষ্যৎ অন্ধকার হয়ে যায়। বরং, দু’দলের মধ্যে একটি বোঝাপড়া থাকতে হবে। আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি, যদি এই দুই দলের মধ্যে ভালো বোঝাপড়া না থাকে, তাহলে রাজনৈতিক ময়দান বিশৃঙ্খল হয়ে যাবে।
‘ধরুন, বিএনপি ক্ষমতায় আসলো, কিন্তু জামায়াতের ওপর দমন-পীড়ন শুরু হলো, তাদের কাজকর্মে বাধা দেওয়া হলো। তাহলে পূর্ণ মেয়াদে ক্ষমতায় থাকা কঠিন হয়ে পড়বে। এর দুটি কারণ হতে পারে: এক, জামায়াত সরকার পতনের আন্দোলন শুরু করবে, এবং দুই, হাসিনার সমর্থকরা সরকারকে বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করার চেষ্টা করবে। তখন সরকার দিশেহারা হয়ে পড়বে। একই পরিস্থিতি যদি জামায়াতের ক্ষেত্রেও ঘটে, অর্থাৎ তারা ক্ষমতায় আসলে, তখন বিএনপি এবং হাসিনার সমর্থকরা একই কাজ করবে’, যোগ করেন তিনি।
ড. ফয়জুল হক বলেন, সামনের দিনে আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে অনৈক্য। আমরা যদি একযোগে ঐক্যবদ্ধ হতে পারি, তাহলে আমাদের নির্বাচনে লড়াই করতে সুবিধা হবে। আমরা জয়ী হতে চেষ্টা করব, এবং জনগণ যাকে ভোট দেবে, তাকে সম্মান জানিয়ে মেনে নেব। এতে বিএনপি বিরোধী দলে গেলেও যেমন কাজ করবে, জামায়াত বিরোধী দলে গেলেও তেমনি কাজ করবে। তবে হাসিনার প্রশ্নে সবাই এক এবং অভিন্ন থাকবে। যদি আমরা এটি করতে পারি, তাহলে মামলা, হামলা, গুম, খুন এবং রাজনৈতিক নিপীড়ন থেকে মুক্তি পাবো। রাজনীতি করার সুযোগ সৃষ্টি হবে, ক্ষমতার ভারসাম্য বজায় রেখে একে অপরের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখা সম্ভব হবে। অন্যথায়, নিজেদের মধ্যে শক্তি ক্ষয় হবে এবং শত্রুরাও নিজেদের স্থান পাবে। সময়মতো ঐক্যবদ্ধ পথ চলতে হবে, না হলে সবার কপালে অন্ধকার অপেক্ষা করছে।