কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) মো. শামিম কুদ্দুছ ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে সরাসরি পরিবহন খাত থেকে নিয়মিত চাঁদাবাজির গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি একটি অডিও ক্লিপে তাকে বলতে শোনা যায়, “আমি কী এখানে হজ করতে আসছি, আমার তো সংসার আছে।”
অডিওতে আরও শোনা যায়, তিনি সার্জেন্ট ও ট্রাফিক ইন্সপেক্টরদের (টিআই) নির্দেশ দেন যেন বাসস্ট্যান্ড থেকে কোনো টাকা কেউ না নেয়, বরং তার লোকদের কাছে টাকা পৌঁছে দিতে হবে।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, এএসপি শামীম সরাসরি পুলিশের পোশাক পরে বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে পরিবহন মালিকদের কাছ থেকে টাকা দাবি করেছেন।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, কুমিল্লা নগরীতে বর্তমানে ১১ জন সার্জেন্ট, ১৭ জন টিআই এবং ৮৯ জন ট্রাফিক সদস্য কাজ করছেন। অভিযোগ রয়েছে, প্রতিটি সার্জেন্টকে মাসে ২০ হাজার টাকা চাঁদা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। এছাড়া নির্দিষ্ট পরিবহনের গাড়ি ডাম্পিং করে প্রতিটি থেকে মাসিক ৫০০ টাকা করে তোলার কথাও তিনি বলেছেন।
কুমিল্লা শহর ও জেলায় প্রায় ৪০ হাজার অটোরিকশা ও সিএনজি এবং তিনটি বড় বাসস্ট্যান্ড রয়েছে। এসব মাধ্যম থেকে নিয়মিত লাখ লাখ টাকা আদায় করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। লাকসাম, দাউদকান্দি ও দেবিদ্বার জোন থেকে মাসিক ২০–৩০ হাজার টাকা করে ওঠানো হয়।
এএসপি শামীমের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তিনি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের তথ্য স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাদের কাছে ফাঁস করেন। ডিএসবিতে দায়িত্বে থাকার সময় চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠায় তাকে ট্রাফিক বিভাগে বদলি করা হয়।
অভিযোগের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে এএসপি শামীম বলেন, এসব প্রোপাগান্ডা। চাঁদাবাজির সঙ্গে টি আই, সার্জেন্ট ও সিটি করপোরেশনের কিছু লোক জড়িত। সার্জেন্ট এমদাদ, টিআই সারোয়ারসহ কয়েকজনকে আমি চিনি।
এ বিষয়ে কুমিল্লা পুলিশ সুপার মো. নাজির আহমদ খান জানান, একজন এএসপি সরাসরি টাকা চাইবেন—এটা স্বাভাবিক নয়। এখনো পর্যন্ত কোনো আনুষ্ঠানিক অভিযোগ পাইনি। তবে বাসস্ট্যান্ডের মালিক বা সাধারণ মানুষ অভিযোগ করলে অবশ্যই আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।