বাংলা সিনেমার সেরা অভিনেতা হিসেবে নায়করাজ উপাধি প্রাপ্ত একমাত্র অভিনেতা নায়করাজ রাজ্জাক।গতকাল ছিল তাঁর অষ্টম মৃত্যুবার্ষিকী। ২০১৭ সালের ২১ আগস্ট তিনি পৃথিবী থেকে বিদায় নেন, কিন্তু বাংলা সিনেমায় রেখে যান এক অবিনশ্বর ইতিহাস।
১৯৬৪ সালের ২৬ এপ্রিল স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে শরণার্থী হয়ে ঢাকায় আসেন রাজ্জাক। আশ্রয় নিয়েছিলেন স্টেডিয়ামের পাশে এক ল্যাম্পপোস্টের নিচে। বাংলা সিনেমা ইন্ডাস্ট্রিতে দাপিয়ে বেড়ানো নায়করাজ রাজ্জাকের সেই স্মৃতিই আজও জীবন্ত হয়ে আছে তাঁর প্রতিষ্ঠানের লোগোতে। রাজলক্ষ্মী প্রোডাকশনের লোগোটিতে দেখা যায় ল্যাম্পপোস্টের নিচে বসা এক মানুষ, পাশে ডাস্টবিন।
প্রথমে নাটকে অল্প টাকায় অভিনয় শুরু করেন তিনি। তারপর এক্সট্রা চরিত্র। কিন্তু গুণী পরিচালক জহির রায়হানের ‘বেহুলা’ ছবিতে নায়ক হয়ে বদলে গেল সবকিছু। সেখান থেকেই শুরু হয় বাংলা সিনেমার সোনালি অধ্যায়। ‘অবুঝ মন’, ‘নীল আকাশের নিচে’, ‘জীবন থেকে নেয়া’, ‘রংবাজ’, ‘অশ্রু দিয়ে লেখা’, ‘ওরা ১১ জন’সহ অসংখ্য হিট ছবি উপহার দিয়েছেন দর্শককে।
স্ত্রী খায়রুন্নেসা লক্ষ্মী ছিলেন তাঁর সবচেয়ে বড় ভরসা। সংসারের অভাব–অনটন, অশ্রু–কষ্ট সব পেরিয়ে তিনি একদিন হয়ে ওঠেন বাংলা চলচ্চিত্রের সবচেয়ে প্রিয় নায়ক। স্ত্রীর নামেই রয়েছে প্রোডাকশন হাউজ ‘রাজলক্ষ্মী প্রোডাকশন’। আর তাই তিনি নিজেই বলতেন, “আমার জীবনটাই একটা সিনেমা।”
নায়ক, পরিচালক, প্রযোজক—সব ভূমিকাতেই সফল রাজ্জাক আজও রয়ে গেছেন দর্শকের হৃদয়ে। ল্যাম্পপোস্টের নিচ থেকে শুরু হওয়া তাঁর যাত্রাই প্রমাণ করে, সত্যিকারের নায়ক কখনো হারিয়ে যান না। সেই সময় থেকে শুরু করে নতুন প্রজন্মের কাছেও তাই ‘রাজ্জাক’ এক অনুপ্রেরণার নাম, যার আদর্শকে লালন করেন এ প্রজন্মের অনেক তারকাই।