সাজ্জাত বিশ্বাস, ঝালকাঠি প্রতিনিধি
২০২৪ সালের ১৮ জুলাই। দেশজুড়ে স্বৈরাচারবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন তুঙ্গে। ওইদিন কর্মস্থলে যাওয়ার জন্য বাসা থেকে বের হন সেলিম তালুকদার।
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হন সেলিম। ১৫ দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর ৩১ জুলাই রাতে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
নিহত সেলিমের বাড়ি ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলা শহরের টিএনটি এলাকায়। তিনি নারায়ণগঞ্জের মেট্রো নিটিং অ্যান্ড ডাইং মিলস লিমিটেডে সহকারী মার্চেন্ডাইজার হিসেবে চাকরি করতেন।
সেলিমের মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি জানতেও পারেননি যে তার স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। মৃত্যুর পর তাদের ঘরে জন্ম নেয় এক কন্যা সন্তান সায়মা সেলিম রেজা। বর্তমানে শিশুটি বাবাহীন অবস্থায় বড় হচ্ছে।
গত ২৪ আগস্ট রাতে বরিশাল মহানগরের বাংলাবাজার এলাকা থেকে তৌহিদ আফ্রিদি গ্রেফতারের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যখন তার অনাগত সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে আলোচনা চলছে, তখনই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শহীদ সেলিমের স্ত্রী।
গতকাল ২৫ আগস্ট, তৌহিদ আফ্রিদি গ্রেফতারের পরের দিন সেলিমের স্ত্রী সুমী আক্তার এক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক স্ট্যাটাস দেন।
স্ট্যাটাসে তিনি লিখেন, আপনারা সবাই তৌহিদ আফ্রিদির অনাগত সন্তান এবং স্ত্রীর জন্য লিখছেন তাদের জন্য আপনাদের ভিতরের মায়া কাজ করছে খারাপ লাগা কাজ করছে। একবার কি ভেবে দেখেছেন এই তৌহিদ আফ্রিদি এবং তার বাবা ডিবি হারুন খুনি হারুনের সাথে মিলে কতগুলা অনাগত সন্তানের বাবাকে হত্যা করেছে কতগুলো স্ত্রীকে বিধবা করেছে কতগুলা সন্তানকে পিতৃ হারা করেছে। তাদের জন্য আপনাদের খারাপ লাগা কাজ করেনা, তৌহিদ আফ্রিদির অনাগত সন্তানের পরিবার সচ্ছল তৌহিদ আফ্রিদির কিছু হয়ে গেলেও এই সন্তানকে লালন পালন করতে কোন কিছুর কমতি থাকবে না। কিন্তু যেসব অনাগত সন্তান তার বাবাকে হারিয়েছে সেসব সন্তানরা ভালোমতো করে খেতেও পারছে না তাদেরকে দেখার মত কেউ নাই।
এসব নিয়ে তো আপনাদের কখনো লিখতে বা খারাপ লাগা কাজ করেনি। আজকে তৌহিদ আফ্রিদি গ্রেফতার হওয়াতে ফেসবুকে তার অনাগত সন্তান এবং স্ত্রীর জন্য মানুষ কেঁদে বুক ভাসাচ্ছে কিন্তু ওইসব দিন আনে দিন খায় মানুষগুলোর অনাগত সন্তানরা কিভাবে জন্ম নিল কিভাবে দিন কাটাচ্ছে সেইসব কেউ দেখার নাই হায়রে মানুষ এখনও স্বৈরাচারদের জন্য বুক ভাষায়।