ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের ভিপি প্রার্থী জালাল আহমেদ তার রুমমেট রবিউল ইসলামকে ছুরি দিয়ে নয়, বরং টিউবলাইট ছুঁড়ে মেরে আহত করেছেন বলে জানা গেছে।
বুধবার (২৭ আগস্ট) তার বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় করা হত্যাচেষ্টা মামলার এজহারে এমনটাই উল্লেখ করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, জালাল আহমদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৩-২০১৪ সেশনের শিক্ষার্থী এবং আহত রবিউল হক ২০১৮-২০১৯ সেশনের শিক্ষার্থী।তারা দুজনেই বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হলের ৪৬২ নম্বর রুমে থেকে লেখাপড়া করে আসছে।
এজাহারে বলা হয়, জালাল সিনিয়র শিক্ষার্থী হওয়ায় বিভিন্ন সময়ে রবিউল হককে হলের রুমের ভেতর নানাভাবে হয়রানি এবং লেখাপড়া ও ঘুমের বিঘ্ন সৃষ্টি করত। এ ব্যাপারে রবিউল হক প্রতিবাদ করলে জালাল আহমদ তাকে মারপিট ও বিভিন্ন ধরনের হুমকি প্রদান করতো ।
মামলা এজাহারে আরও বলা হয়,২৬ আগস্ট রাতে রবিউল হক ৪৬২ নং রুমের ভেতর ঘুমিয়ে পড়ে। রাত সাড়ে ১২টার দিকে জালাল রুমের ভিতর প্রবেশ করে বৈদ্যুতিক লাইট জ্বালায় এবং চেয়ার টানা হেঁচড়া করে বিকট শব্দ করতে শুরু করে। যার ফলে রবিউল হকের ঘুম ভেঙ্গে যায়। এসময় রবিউল জালালকে বলেন, ভাই সকালে আমি লাইব্রেরিতে যাবো আপনি একটু আস্তে শব্দ করেন। এতে আসামি জালাল আহমদ ক্ষিপ্ত হয়ে শিক্ষার্থী রবিউল হকের সাথে তর্কবির্তক শুরু করে।
তর্কবির্তকের একপর্যায়ে জালাল আহমদ রবিউল হককে কাঠের চেয়ার দিয়ে মাথা লক্ষ্য করে বারি মারে। এতে রবিউল হক তার হাত দিয়ে কাঠের চেয়ারের বারি প্রতিহত করলেও কপালে তিনি আঘাত প্রাপ্ত হয়। পরবর্তীতে জালাল আহমদ পুরাতন টিউব লাইট দিয়ে রবিউল হককে পুনরায় মাথায় লক্ষ্য করে আঘাত করে। এসময় রবিউল হক মাথা সরিয়ে নিলে উক্ত টিউব লাইটের আঘাত তার বুকের বাম পাশে লেগে টিউব লাইট ভেঙ্গে যায় ফলে তার বুক কেটে রক্তাক্ত হয়।
পরবর্তীতে আসামি জালাল আহমদ পুনরায় ভাঙ্গা ও ধারালো টিউব লাইট দিয়ে রবিউলকে আঘাত করলে তিনি তার বাম হাত দিয়ে প্রতিহত করে তবে টিউব লাইটের আঘাতে বাম হাতেও জখম হয়।
প্রসঙ্গত, রুমমেটকে রক্তাক্ত করার পর নিজেকে রুমে আবদ্ধ করে রাখেন ডাকসু নির্বাচনে ভিপি প্রার্থী জালাল আহমদ। এসময় হলের অন্য শিক্ষার্থীরা তার রুমের সামনে এসে জড়ো হয়ে স্লোগান দিতে থাকে। এরপর দীর্ঘ সময় চেষ্টার পর রাত আড়াইটার দিকে জালালকে রুম থেকে বের করে পুলিশে সোপর্দ করে বিশ্ববিদ্যাল প্রশাসন।
এদিকে জালালের বিরুদ্ধে এখনো লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন। তিনি বলেন, নির্বাচনী টাস্কফোর্স এটি নিয়ে কাজ করছে। খুব শীঘ্রই তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হবে। তবে তার অপরাধের ধরণ অনুযায়ী তার প্রার্থিতা বাতিল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।